শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৩ অপরাহ্ন
মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি॥ মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ৩নং চর এককরিয়া ইউনিয়নের চর লতা গ্রামের মোঃ আক্কাছ আলীর কিশোরী কন্যাকে জোর পূর্বক একাধিকবার ধর্ষন, গর্ভপাতের পর নবজাতককে হত্যা করায় স্থানীয় থানায় মামলা করতে আসলে কথিত একটি দালাল চক্র সমজোতার কথা বলে থানা থেকে ভিকটিমকে বের করে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে বৃহস্পতিবার রাতে।
শুক্রবার রাতে বিভিন্ন অন- লাইন মিডিয়ায় বিষয়টি প্রকাশ পেলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন গভীর রাতে ভিকটিমকে তার বাড়ী থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। শনিবার সকালে ভিকটিমের বাবা আক্কাছ আলী বাদী হয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নাম্বার ১০। ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য তাকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ৫নং সদর ইউনিয়নের রুকুন্দি গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন হিরু শাহ’র পুত্র বর্তমানে চরহোগলা গ্রামের ভূঁইয়া বাড়িতে বসবাসকারী জুয়েল শাহ’র বাসায় ৬ মাস পূর্বে জি-এর কাজ নেয় ঐ কিশোরী। কাজে যোগদানের পর লম্পট জুয়েল শাহ’র লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওই কিশোরীর উপর। নানা প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে এবং একাধিকবার তাকে ধর্ষন করেন।
এর ফলশ্রুতিতে গত জানুয়ারিতে পেগনেট হয়ে পড়ে কিশোরী। প্রথমে কিছু না বুঝলেও তিন মাস অতিবাহিত হলে শারীরিক পরিবর্তন দেখা দিলে বিষয়টি জুয়েল শাহ’র স্ত্রী মোসাঃ লীয়ার কাছে খুলে বলেন।
তিনি বাড়িতে বসেই পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন কিশোরীটি অন্তস্বত্তা। তিনি বিষয়টি দামাচাপা দেয়ার জন্য ওই কিশোরীর কথা গুরুত্ব না দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে আরো তিন মাস পাড় করে দেন। চলতি মাসের প্রথম দিকে কিশোরী আরো বেশি শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে গত সপ্তাহে জুয়েল শাহ ও তার স্ত্রী লিয়া বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সুকৌশলে ওই কিশোরীকে পাতারহাটের কথা বলে বরিশাল শেবাচিম’র গাইনি ওয়ার্ডে নিয়ে যান।
সেখানের কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্স এ অবস্থায় বাচ্ছা নষ্ট করার পরামর্শ দিলে জুয়েল শাহ বরিশাল শহরে তার এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে সেখানে নার্স ও একজন আয়াকে ডেকে এনে তার গর্ভে থাকা ৬ মাসের কন্যা সন্তানকে জোর পূর্বক প্রসব করান বলে জানান ঐ কিশোরী মাতা। এবং ঘটনাস্থলেই নবজাতককে জুয়েল শাহ ও তার স্ত্রী লীয়া মিলে হত্যা করেন।
জঘন্য এই ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে চতুর জুয়েল শাহ কথিত নামধারী সাংবাদিক ও দালাল চক্রের শরণাপন্ন হয়। সেই চক্রটি কিশোরিকে মামলা করতে বাধা দিয়ে বন্দরের বটতলার একটি বাসায় আটকে রেখে দেড় লাখ টাকায় বিষয়টি ধামাচাপা দেবার চেষ্টা চালায়। মামলার বাদী ভিকটিমের বাবা আক্কাছ আলী দেড় লাখ টাকায় মিমাংসার কথা সংবাদ মাধ্যমের নিকট স্বীকার করেন। এই নামধারী সাংবাদিক ও দালাল চক্রের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক ধর্ষনের ঘটনায় হুমকি ধমকি দিয়ে মামলা না করার জন্য ভিকটিমদের বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনাটিও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয় বিভিন্ন রকম অপকৌশল করে যাচ্ছেন তারা। এ ব্যাপারে মেহেন্দিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবিদুর রহমান গন মাধ্যমকে জানান, এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামি আটকের জোর প্রচেষ্টা চলছে। তবে তিনি আরো জানান, মামলা তদন্তে ঘটনার সাথে যেই জড়িত থাকুক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এলাকাবাসী প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্ষক জুয়েল শাহ ও এই ঘটনার সহোযোগী তার স্ত্রী লীয়া বেগমকে দ্রুত গ্রেফতার করা সহ কথিত নামধারী সাংবাদিক ও দালাল চক্রের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান।
Leave a Reply